ওয়েবসাইটের প্লাগিন কি?what is Plugins?
ওয়েবসাইটের প্লাগিন কি?
ওয়েবসাইটের প্লাগইন হলো একটি সফটওয়্যার বা কোড যা আপনার ওয়েবসাইটে অতিরিক্ত কার্যকারিতা যোগ করে। প্লাগইনগুলি মূলত একটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনের জন্য ডিজাইন করা হয় এবং এটি আপনার ওয়েবসাইটের মূল সফটওয়্যারের সঙ্গে সংহত হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেসে তৈরি করা হয়, তাহলে আপনি একটি SEO প্লাগইন ব্যবহার করতে পারেন যা আপনার ওয়েবসাইটের সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন (SEO) উন্নত করে।
এটি
একটি ওয়েবসাইটের মূল কাঠামোর সাথে যুক্ত হয়ে নতুন ফিচার বা কার্যকলাপ যোগ করে। মনে
করুন, একটি ওয়েবসাইট একটি বাড়ির মতো। মূল কাঠামোটি বাড়ির ভিত্তি, আর প্লাগিনগুলি
হল বাড়িতে নতুন রুম, বাগান, বা অন্যান্য সুবিধা যোগ করার মতো।
উদাহরণঃ
- ই-কমার্স
ওয়েবসাইট: একটি
ই-কমার্স ওয়েবসাইটে একটি পেমেন্ট গেটওয়ে প্লাগিন যোগ করে আপনি গ্রাহকদের কাছ
থেকে অনলাইনে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
- ব্লগ: একটি ব্লগে একটি কমেন্ট প্লাগিন
যোগ করে পাঠকরা আপনার পোস্টে মন্তব্য করতে পারবেন।
- সোশ্যাল
মিডিয়া: একটি
সোশ্যাল মিডিয়া প্লাগিন যোগ করে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট সোশ্যাল মিডিয়ায়
শেয়ার করা সহজ হয়ে যাবে।
প্লাগিনের সুবিধাঃ
- নতুন
ফিচার: প্লাগিনের
মাধ্যমে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে নতুন নতুন ফিচার যোগ করতে পারবেন।
- সময়
বাঁচায়: প্লাগিন
তৈরি করার জন্য কোডিং জানার দরকার নেই। আপনি শুধু মাত্র ইনস্টল করেই ব্যবহার করতে
পারবেন।
- কাস্টমাইজেশন: অনেক প্লাগিনই কাস্টমাইজ করা যায়।
আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সাথে মিলিয়ে প্লাগিনটিকে পরিবর্তন করতে পারবেন।
কিভাবে প্লাগিন ব্যবহার করবেনঃ
- ওয়েবসাইট
প্ল্যাটফর্ম: আপনার
ওয়েবসাইট কোন প্ল্যাটফর্মে তৈরি করা হয়েছে তার উপর নির্ভর করে প্লাগিন ইনস্টল
করার পদ্ধতি ভিন্ন হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ওয়ার্ডপ্রেস, জুমলা, ড্রুপাল ইত্যাদি
প্ল্যাটফর্মের জন্য পৃথক পৃথক প্লাগিন রয়েছে।
- প্লাগিন
ডিরেক্টরি: আপনার
প্ল্যাটফর্মের প্লাগিন ডিরেক্টরি থেকে আপনার পছন্দের প্লাগিনটি খুঁজে বের করুন।
- ইনস্টল: প্লাগিনটি ডাউনলোড করে আপনার ওয়েবসাইটে
ইনস্টল করুন।
- সক্রিয়
করুন: ইনস্টল করার
পর প্লাগিনটি সক্রিয় করুন।
প্লাগিন নির্বাচন করার সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখবেনঃ
- প্রয়োজনীয়তা: আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কোন প্লাগিনটি
প্রয়োজন তা ভালোভাবে বুঝুন।
- জনপ্রিয়তা: জনপ্রিয় এবং নিয়মিত আপডেট হওয়া
প্লাগিন নির্বাচন করুন।
- সমর্থন: প্লাগিনটির সাপোর্ট কেমন তা খতিয়ে
দেখুন।
- সুরক্ষা: প্লাগিনটি সুরক্ষিত কিনা তা নিশ্চিত
করুন।
ওয়েবসাইটের প্লাগিন আপনার ওয়েবসাইটকে আরও কার্যকরী এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। তবে, অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইটের স্পিডকে কমাতে পারে। তাই, শুধু প্রয়োজনীয় প্লাগিনগুলোই ব্যবহার করুন।
ওয়েবসাইটে প্লাগিনের প্রয়োজনীয়তা
ওয়েবসাইটে
প্লাগিন ব্যবহার করা কেন গুরুত্বপূর্ণ, তা বুঝতে চাইলে, একটি বাড়ির সাথে তুলনা করা
যেতে পারে।
একটি
বাড়ির মূল কাঠামো তৈরি হয়ে গেলে, আমরা বাড়ির সৌন্দর্য বাড়াতে, আরামদায়ক করতে এবং
বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন জিনিস যোগ করি। ঠিক তেমনি, একটি ওয়েবসাইটের মূল কাঠামো
তৈরি হয়ে গেলে, প্লাগিন ব্যবহার করে আমরা ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বাড়াতে, নতুন ফিচার
যোগ করতে এবং ওয়েবসাইটকে আরও ব্যবহারকারীবান্ধব করতে পারি।
প্লাগিন ব্যবহারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণঃ
- নতুন
ফিচার যোগ করা:
প্লাগিন ব্যবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে নতুন নতুন ফিচার যোগ করতে পারবেন।
উদাহরণস্বরূপ, একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটে পেমেন্ট গেটওয়ে প্লাগিন যোগ করে আপনি
গ্রাহকদের কাছ থেকে অনলাইনে পেমেন্ট নিতে পারবেন।
- সময়
বাঁচায়: প্লাগিন
তৈরি করার জন্য কোডিং জানার দরকার নেই। আপনি শুধু মাত্র ইনস্টল করেই ব্যবহার করতে
পারবেন। এর ফলে আপনার সময় এবং শক্তি বাঁচবে।
- কাস্টমাইজেশন: অনেক প্লাগিনই কাস্টমাইজ করা যায়।
আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সাথে মিলিয়ে প্লাগিনটিকে পরিবর্তন করতে পারবেন।
- বিশেষ
কাজের জন্য বিশেষ প্লাগিন:
বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্লাগিন রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ,
একটি ব্লগের জন্য কমেন্ট প্লাগিন, একটি ফোরামের জন্য ফোরাম প্লাগিন ইত্যাদি।
- সার্চ
ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO):
অনেক প্লাগিনই SEO-বান্ধব। এগুলো ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে
উন্নত র্যাঙ্ক করতে সাহায্য করবে।
কিছু জনপ্রিয় প্লাগিনের উদাহরণঃ
- ওয়ার্ডপ্রেস: Yoast SEO, WooCommerce,
Contact Form 7 ইত্যাদি।
- জুমলা: K2, Akeeba Backup ইত্যাদি।
প্লাগিন ব্যবহারের সময় কিছু বিষয় মাথায় রাখবেনঃ
- অতিরিক্ত
প্লাগিন ব্যবহার না করা:
অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইটের স্পিডকে কমাতে পারে।
- প্লাগিন
আপডেট করা: নিয়মিত
আপডেট করা জরুরী। কারণ পুরানো প্লাগিনগুলো সুরক্ষা ঝুঁকি বাগতে পারে।
- প্লাগিনের কার্যকারিতা: প্লাগিনটি আপনার প্রয়োজন মেটাচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
ওয়েবসাইটে
প্লাগিন ব্যবহার করা আপনার ওয়েবসাইটকে আরও কার্যকরী এবং আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে।
তবে, অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইটের স্পিডকে কমাতে পারে। তাই, শুধু প্রয়োজনীয়
প্লাগিনগুলোই ব্যবহার করুন।
ওয়েবসাইটে প্লাগিন কীভাবে কাজ করে?
সহজ
করে বললে, ওয়েবসাইটের প্লাগিন হল একটি ছোট্ট সফটওয়্যার যা ওয়েবসাইটের মূল কাঠামোতে
যুক্ত হয়ে নতুন ফিচার বা কার্যকলাপ যোগ করে।
এটা কিভাবে কাজ করে, তা একটু বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলা যাকঃ
- ওয়েবসাইটের
মূল কাঠামো: প্রথমে
একটি ওয়েবসাইটের মূল কাঠামো তৈরি করা হয়। এই কাঠামোটিকে কোর বলা হয়। এই কোরে
ওয়েবসাইটের মূল কার্যকলাপগুলো থাকে।
- প্লাগিন
ইনস্টল করা: এরপর
এই কোরের সাথে বিভিন্ন প্লাগিন ইনস্টল করা হয়। প্রতিটি প্লাগিন নির্দিষ্ট একটি
কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়।
- কোরের
সাথে যুক্ত হওয়া:
ইনস্টল হওয়ার পর প্লাগিনটি ওয়েবসাইটের কোরের সাথে যুক্ত হয়।
- নতুন
ফিচার যোগ করা:
এই যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে প্লাগিনটি ওয়েবসাইটে নতুন ফিচার বা কার্যকলাপ যোগ করে।
- ব্যবহারকারী: এই নতুন ফিচারগুলো ওয়েবসাইটের
ব্যবহারকারীরা সরাসরি ব্যবহার করতে পারে।
উদাহরণঃ
ধরুন
আপনার একটি ব্লগ ওয়েবসাইট আছে। আপনি চান আপনার ব্লগে পাঠকরা কমেন্ট করতে পারে। আপনি
একটি কমেন্ট প্লাগিন ইনস্টল করবেন। এই প্লাগিনটি আপনার ব্লগের কোরের সাথে যুক্ত হবে
এবং আপনার ব্লগে একটি কমেন্ট সেকশন তৈরি করবে। এখন পাঠকরা আপনার পোস্টে কমেন্ট করতে
পারবে।
প্লাগিন কেন ব্যবহার করা হয়ঃ
- সময়
বাঁচায়: প্লাগিন
তৈরি করার জন্য কোডিং জানার দরকার নেই। আপনি শুধু মাত্র ইনস্টল করেই ব্যবহার করতে
পারবেন।
- বিভিন্ন
কাজের জন্য বিভিন্ন প্লাগিন:
বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটের জন্য বিভিন্ন ধরনের প্লাগিন রয়েছে।
- সহজে
ব্যবহার করা যায়:
প্লাগিনগুলো সাধারণত সহজে ব্যবহার করা যায়।
- নতুন
ফিচার যোগ করা:
প্লাগিন ব্যবহার করে আপনি আপনার ওয়েবসাইটে নতুন নতুন ফিচার যোগ করতে পারবেন।
একটি ভবনের সাথে তুলনাঃ
একটি ওয়েবসাইটকে একটি ভবনের সাথে তুলনা করা যায়। ভবনের মূল কাঠামো হল ওয়েবসাইটের কোর। প্লাগিনগুলো হল ভবনে যোগ করা বিভিন্ন জিনিস, যেমন এয়ার কন্ডিশনার, লাইট, বাথরুম ইত্যাদি। এই জিনিসগুলো ভবনের কার্যকারিতা বাড়ায়। ঠিক তেমনি, প্লাগিনগুলো ওয়েবসাইটের কার্যকারিতা বাড়ায়।
ওয়েবসাইটের
প্লাগিন হল একটি দারুণ সরঞ্জাম যা আপনার ওয়েবসাইটকে আরও কার্যকরী এবং আকর্ষণীয় করে
তুলতে পারে।
ফ্রি প্লাগিন আর পেড প্লাগিনের মধ্যে পার্থক্য
ফ্রি প্লাগিন এবং পেড প্লাগিন দুই ধরনের ওয়েবসাইট প্লাগিন। তাদের মধ্যে মূল পার্থক্য হল এই যে, ফ্রি প্লাগিন ব্যবহার করার জন্য কোনো অর্থ প্রদান করতে হয় না, আর পেড প্লাগিন ব্যবহার করার জন্য অর্থ প্রদান করতে হয়।
ফ্রি প্লাগিনের বৈশিষ্ট্যঃ
- মূল্য: এগুলো ব্যবহার করার জন্য কোনো অর্থ
প্রদান করতে হয় না।
- কার্যকারিতা: সাধারণত মৌলিক কাজগুলো করার জন্য
ডিজাইন করা হয়।
- সীমাবদ্ধতা: অনেক সময় কিছু ফিচার সীমিত থাকে
বা কাস্টমাইজেশনের সুযোগ কম থাকে।
- সাপোর্ট: ফ্রি প্লাগিনের সাপোর্ট সীমিত হতে
পারে।
পেড প্লাগিনের বৈশিষ্ট্যঃ
- মূল্য: এগুলো ব্যবহার করার জন্য অর্থ প্রদান
করতে হয়।
- কার্যকারিতা: সাধারণত ফ্রি প্লাগিনের তুলনায়
আরও বেশি কার্যকরী এবং উন্নত ফিচার থাকে।
- কাস্টমাইজেশন: এগুলোকে নিজের মতো করে কাস্টমাইজ
করার সুযোগ বেশি থাকে।
- সাপোর্ট: পেড প্লাগিনের সাথে সাধারণত ভালো
সাপোর্ট দেয়া হয়।
কোনটি
ব্যবহার করা উচিত?
আরে পড়ূনঃ ওয়েব সাইটের থিম কি?/Website Themes Setup
এটি
নির্ভর করে আপনার ওয়েবসাইটের প্রয়োজনের উপর।
- যদি
আপনার মৌলিক কিছু কাজ করার জন্য প্লাগিন দরকার হয়: তাহলে ফ্রি প্লাগিন আপনার জন্য
উপযুক্ত হতে পারে।
- যদি
আপনার উন্নত ফিচার এবং কাস্টমাইজেশনের প্রয়োজন হয়: তাহলে পেড প্লাগিন আপনার জন্য ভালো
হতে পারে।
ফ্রি
এবং পেড প্লাগিনের মধ্যে পার্থক্যের একটি টেবিল:
বৈশিষ্ট্য |
ফ্রি প্লাগিন |
পেড প্লাগিন |
মূল্য |
বিনামূল্যে |
অর্থ
প্রদান করতে হয় |
কার্যকারিতা |
মৌলিক |
উন্নত |
কাস্টমাইজেশন |
সীমিত |
বেশি |
সাপোর্ট |
সীমিত |
ভালো |
উদাহরণ:
- ফ্রি
প্লাগিন: Contact
Form 7 (ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য একটি ফ্রি কন্টাক্ট ফর্ম প্লাগিন)
- পেড
প্লাগিন:
WooCommerce (ওয়ার্ডপ্রেসের জন্য একটি ই-কমার্স প্লাগিন)
কোন
প্লাগিনটি ব্যবহার করবেন, তা নির্বাচন করার সময় এই বিষয়গুলো বিবেচনা করুন:
- আপনার
ওয়েবসাইটের প্রয়োজন:
আপনার ওয়েবসাইটের জন্য কোন ফিচারগুলো প্রয়োজন?
- আপনার
বাজেট: আপনি কত
টাকা খরচ করতে পারবেন?
- প্লাগিনের
জনপ্রিয়তা: প্লাগিনটি
কতটা জনপ্রিয় এবং নির্ভরযোগ্য?
- প্লাগিনের
আপডেট: প্লাগিনটি
নিয়মিত আপডেট করা হয় কিনা?
সারসংক্ষেপ:
ফ্রি এবং পেড প্লাগিন দুইটিই ওয়েবসাইটকে আরও কার্যকরী করতে পারে। কোনটি ব্যবহার করবেন, তা আপনার নিজের প্রয়োজনের উপর নির্ভর করে।
ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url