মানুষের শরীরে মোট কতটি জয়ান্টে আছে?

মানুষের শরীরে মোট কতটি জয়ান্টে আছে?


মানুষের শরীরে প্রায় ৩০০ টির বেশি জয়েন্ট রয়েছে। এই জয়েন্টগুলি মজুত হয় মাংসপেশী, হাড়, লিগামেন্ট, ও অন্যান্য কনেক্টিভ টিস্যুর মাধ্যমেজয়ান্ট ব্যাথা হলো এমন একটি শারীরিক অবস্থা যা মানুষের শরীরে অস্থিরতা এবং ব্যথার মাত্রা একসাথে বৃদ্ধি করে।এটি সাধারণত একটি শারীরিক আঘাতের ফলাফল হতে পারে যা ধারণকারীকে জীবনের শেষ পর্যন্ত বহন করতে হতে পারে।এটি আকারে এবং দুর্বলতার মাত্রা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরণের ব্যাথা সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে।

জয়ান্ট ব্যাথার বিভিন্ন কারণে হতে পারে তার মধ্যে প্রধান কিছু কারণ নিম্নে লিখা হল।
  • অসুস্থ পোষণঃ প্রাথমিকভাবে, অসুস্থ পোষণ হতে পারে জয়ান্ট ব্যাথার একটি মৌলিক কারণ।
  • অভ্যন্তরীণ ক্ষতিঃ মানুষের শরীরে অভ্যন্তরীণ আঘাত হতে পারে অনেকগুলি কারণে, যেমন অস্থি ভাঙ্গা, শ্বাসকষ্ট, প্রদাহ, অস্থি সংক্রান্ত রোগ, ইত্যাদি।
  • অব্যবহিত গতি বা ফিজিক্যাল অবস্থাঃ যেমন খোলা দোকানে পা পোষণ করা, অব্যবহিত বা অসমত পোষণের ফলে অস্থিরতা এবং ব্যাথা হতে পারে।
  • আয়তনবিশিষ্ট অভ্যন্তরীণ অবস্থাঃ যেমন রক্তক্ষরণ, নার্ভ সংক্রান্ত সমস্যা, ইত্যাদি অবস্থার কারণে অস্থিরতা হতে পারে।


জয়ান্ট ব্যাথার একটি সাধারণ লক্ষণ হলো জীবনের গুন্য ব্যাথা, যা অনেকগুলি কারণে হতে পারে। তবে, এটি সাধারণত শরীরের প্রতিটি অংশে অস্থিরতা অথবা মাংসপেশীর ব্যথার একটি মৌলিক সাংকেতিক বা শারীরিক সাধারণ ফলাফল হতে পারে

মানুষের শরীরে জয়েন্টে ব্যথার ধারণাঃ

  • অস্টিওআর্থারাইটিস
  • বারসাইটিস
  • গাউট
  • রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস
  • মচকে যাওয়া, স্ট্রেন এবং অন্যান্য আঘাত

অস্টিওআর্থারাইটিস হলো এক ধরণের ক্ষয়কারী অস্থিসন্ধির রোগ যেখানে হাড়ের ক্ষয় ঘটে। এটি শরীরের যেকোনো জয়েন্টে হতে পারে, তবে হাঁটু, মেরুদণ্ড, কব্জি এটি বেশি দেখা যায়।

অস্টিওআর্থারাইটিসের ব্যথার লক্ষণগুলি হল।


  • জয়েন্টে ব্যথাঃএটি অস্টিওআর্থারাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ। ব্যথা তীব্র হতে পারে, বিশেষ করে যখন জয়েন্ট ব্যবহার করা হয়।
  • জয়েন্টে শক্তভাবঃজয়েন্ট শক্ত হতে পারে, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর বা দীর্ঘ সময় বসে থাকার পর।
  • জয়েন্টে ফোলাভাবঃজয়েন্টে ফোলাভাব দেখা দিতে পারে, বিশেষ করে দিনের শেষে।
  • জয়েন্টে কড়া কড়া শব্দঃজয়েন্ট নড়াচড়া করার সময় কড়া কড়া শব্দ হতে পারে।
  • জয়েন্ট নড়াচড়ায় অসুবিধাঃজয়েন্ট নড়াচড়া করা কঠিন হতে পারে, বিশেষ করে ব্যথার কারণে।

অস্টিওআর্থারাইটিসের ব্যথার কারণগুলি হল।

  • বয়সঃবয়স বাড়ার সাথে সাথে অস্টিওআর্থারাইটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • ওজনঃঅতিরিক্ত ওজন জয়েন্টের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, যার ফলে অস্টিওআর্থারাইটিস হতে পারে।
  • আঘাতঃজয়েন্টে আঘাত অস্টিওআর্থারাইটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
  • বংশগতিঃযদি আপনার পরিবারে অস্টিওআর্থারাইটিসের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনারও এটি হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
  • কিছু পেশাঃকিছু পেশা, যেমন যেগুলিতে জয়েন্টের উপর বারবার চাপ পড়ে, অস্টিওআর্থারাইটিসের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

অস্টিওআর্থারাইটিসের ব্যথার চিকিৎসাগুলি হল।

অস্টিওআর্থারাইটিসের ব্যথার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন উপায় রয়েছে,তার মধ্যে উল্ল্যেযগ্য হল।

  • ওজন কমানোঃযদি আপনি অতিরিক্ত ওজনের হন, তাহলে ওজন কমানো জয়েন্টের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করবে এবং ব্যথা কমাতে পারে।
  • ব্যায়ামঃনিয়মিত ব্যায়াম জয়েন্টের নমনীয়তা এবং শক্তি বজায় রাখতে সাহায্য করবে এবং ব্যথা কমাতে পারে।
  • ওষুধঃব্যথানাশক ওষুধ, যেমন প্যারাসিটামল বা NSAIDs, ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে।
  • ফিজিওথেরাপিঃএকজন ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে ব্যায়াম এবং অন্যান্য থেরাপি শেখাতে পারেন যা ব্যথা কমাতে এবং জয়েন্টের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করবে।

বারসাইটিসের ব্যাথার কারণ কি?

বারসাইটিস হলো শরীরের বারসা নামক থলিগুলোতে প্রদাহের ফলে সৃষ্ট ব্যথা। বারসা হলো শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টে অবস্থিত ছোট ছোট থলি যা সাইনোভিয়াল তরল দিয়ে ভরা থাকে। এই তরল জয়েন্টগুলোকে লুব্রিকেট করে এবং ঘর্ষণ কমাতে সাহায্য করে।

বারসাইটিস ব্যাথার লক্ষণগুলি হলো।

  • জয়েন্টে ব্যথা,
  • লালভাব,
  • ফোলাভাব,
  • জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া,
  • জয়েন্ট নড়াচড়ায় অসুবিধা।

বারসাইটিসর ব্যাথা হওয়ার কারণ কি?

  • অতিরিক্ত ব্যবহারঃ বারবার একই রকমের কাজ করা, যেমন খেলাধুলা করা বা কাজের কারণে, বারসাইটিস হতে পারে।
  • আঘাতঃজয়েন্টে আঘাত পেলে বারসাইটিস হতে পারে।
  • সংক্রমণঃ জীবাণু বা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে বারসাইটিস হতে পারে।
  • অন্যান্য রোগঃ গেঁটেবাত, সোরিয়াসিস, এবং রিউমাটয়েড আর্থারাইটিসের মতো রোগগুলি বারসাইটিসের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • বারসাইটিসের ব্যথা কমাতে কিছু টিপস ব্যবহার করা হয়।
  • বিশ্রামঃ ব্যথার জয়েন্টটিকে বিশ্রাম দিন এবং এমন কাজগুলি করা এড়িয়ে চলুন যা ব্যথাকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
  • বরফঃ ব্যথার জয়েন্টে দিনে কয়েকবার বরফ লাগান।
  • ঔষধঃ ব্যথা কমাতে ওষুধ, যেমন আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসিটামিনোফেন, খাওয়া যেতে পারে।
  • ফিজিওথেরাপিঃ ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে ব্যথার জয়েন্টের নমনীয়তা এবং শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করতে পারে।

আপনার যদি বারসাইটিসের লক্ষণ থাকে, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত। ডাক্তার আপনার লক্ষণগুলির কারণ নির্ণয় করতে এবং সঠিক চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারবেন।

গাউটের ব্যাথা কি?

গাউট হলো এক ধরনের বাতের ব্যথা যা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে হয়। যখন ইউরিক অ্যাসিড স্ফটিক তৈরি করে জয়েন্টে জমা হয়, তখন তীব্র ব্যথা, ফোলাভাব এবং প্রদাহ দেখা দেয়।

গাউটের লক্ষণগুলি হল।

  • তীব্র ব্যথাঃব্যথা সাধারণত হঠাৎ করে শুরু হয় এবং কয়েক ঘন্টার মধ্যে সর্বোচ্চ তীব্রতায় পৌঁছায়। এটি প্রায়শই রাতে হয় এবং এতটাই তীব্র হতে পারে যে ঘুম ভেঙে যেতে পারে।
  • ফোলাভাবঃআক্রান্ত জয়েন্ট ফুলে যায় এবং লাল দেখায়।
  • স্পর্শে কোমলতাঃআক্রান্ত জয়েন্ট স্পর্শে খুবই কোমল হয়।
  • গরম অনুভূতিঃ আক্রান্ত জয়েন্ট গরম অনুভূত হয়।

গাউটের কিছু সাধারণ কারণ হল।

  • পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়াঃ পিউরিন হলো এক ধরনের যৌগ যা শরীরে ভেঙে ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে। মাংস, মাছ, ডিম, শুকনো ডাল, এবং কিছু সবজি পিউরিন সমৃদ্ধ খাবার।
  • অতিরিক্ত ওজনঃ অতিরিক্ত ওজন শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে।
  • মদ্যপানঃ মদ্যপান শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের বর্জ্য নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত করে।
  • কিছু ওষুধের ব্যবহারঃ কিছু ওষুধ, যেমন ডায়িউরেটিক এবং এসপিরিন, শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে।

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস ব্যাথা কি?

রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (আরএ) হল এক ধরনের দীর্ঘস্থায়ী বাতজনিত রোগ যা জয়েন্টগুলোতে প্রদাহ সৃষ্টি করে। এই প্রদাহের ফলে জয়েন্টগুলোতে ব্যথা, ফোলাভাব, শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ক্ষতি হতে পারে। আরএ শরীরের অন্যান্য অংশকেও প্রভাবিত করতে পারে, যেমন চোখ, ফুসফুস এবং হৃৎপিণ্ড।আরএ-এর ব্যথা সাধারণত তীব্র এবং জয়েন্টগুলোতে গভীরভাবে অনুভূত হয়। এটি জয়েন্টগুলোকে নড়াচড়া করা কঠিন করে তুলতে পারে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠার পরে বা দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকার পরে ব্যথা আরও খারাপ হতে পারে। আরএ-এর ব্যথার সাথে অন্যান্য উপসর্গও থাকতে পারে, যেমন:

  • জয়েন্টগুলোতে ফোলাভাব এবং শক্ত হয়ে যাওয়া
  • ক্লান্তি
  • জ্বর
  • ওজন কমানো
  • শরীরে অন্যান্য অংশে ব্যথা, যেমন পেশী বা টেন্ডন

আরএ-এর ব্যথার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ধরণের ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে।

আরএ-এর ব্যথার চিকিৎসার কোন একক "সঠিক" উপায় নেই। চিকিৎসা সাধারণত ব্যথির তীব্রতা, রোগের অগ্রগতি এবং ব্যক্তির সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে হয়ে থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪