স্যালাইন খাওয়া কি উপকার?

স্যালাইন খাওয়া কি উপকার?


একজন মানুষ প্রতিদিন কতগুলো স্যালাইন খেতে পারবে তা নির্ভর করে তার বয়স, শারীরিক অবস্থা এবং কতটা পানিশূন্যতায় আক্রান্ত তার উপর নির্ভর করে।স্যালাইন খাওয়ার অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হল।

  • পানিশূন্যতা রোধধেঃ ডায়রিয়া, বমি, অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। এর ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। স্যালাইন খেলে শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণ হয় এবং পানিশূন্যতা রোধে কাজ করে।
  • শক্তির স্তর বৃদ্ধিঃ পানিশূন্যতা ও লবণের ঘাটতির ফলে শরীরে দুর্বলতা, ক্লান্তি, মাথাব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। স্যালাইন খেলে এসব লক্ষণ দূর হয়ে শরীরে শক্তির সঞ্চার হয়।
  • হজম বৃদ্ধিঃ স্যালাইনে থাকা লবণ ও গ্লুকোজ হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
  • রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ নিম্ন রক্তচাপের রোগীদের ক্ষেত্রে স্যালাইন খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • কিডনির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধঃ স্যালাইন খেলে কিডনিতে রক্ত ​​প্রবাহ বৃদ্ধি পায় এবং কিডনির কার্যক্ষমতা উন্নত হয়।
  • মস্তিষ্কের কার্যকারিতাঃ স্যালাইনে থাকা ইলেক্ট্রোলাইট মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  • খেলাধুলার পর পানিশূন্যতা রোধঃ খেলাধুলার পর প্রচুর ঘামের কারণে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি ও লবণ বেরিয়ে যায়। স্যালাইন খেলে শরীরে পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব।
  • গর্ভবতীঃ গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের ক্ষেত্রে স্যালাইন খেলে পানিশূন্যতা রোধ করা সম্ভব।
  • শিশুঃশিশুদের ডায়রিয়া, বমি, অতিরিক্ত ঘামের কারণে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। স্যালাইন খেলে শিশুদের পানিশূন্যতা রোধ করে।

প্রতিটি জিনিসের ভাল খারাপ দুটিই দিক থাকে এ ক্ষেতে এর বিপরিত নয়।স্যালাইনের ক্ষেত্রে কিছু সাবধানতা রয়েছে।
  • ডায়াবেটিস, কিডনি রোগ, হৃদরোগের রোগীদের স্যালাইন খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
  • স্যালাইন বানানোর সময় নির্দেশাবলী সঠিকভাবে অনুসরণ করা উচিত।
  • স্যালাইন খাওয়ার পর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত।

স্যালাইন খাওয়ার কিছু ক্ষতি কার দিকও রয়েছে নিম্নে এগুল লিখা হল।

স্যালাইনেঅতিরিক্ত লবণ।

  • স্যালাইনে প্রচুর পরিমাণে লবণ থাকে।
  • অতিরিক্ত স্যালাইন খেলে শরীরে লবণের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
  • এর ফলে হাইপারনেট্রেমিয়া নামক সমস্যা হতে পারে।
  • হাইপারনেট্রেমিয়ার লক্ষণগুলি হলো:
    • তৃষ্ণার্ত হওয়া
    • মাথাব্যথা
    • বমি বমি ভাব
    • পেশীতে টান
    • বিভ্রান্তি
    • খিঁচুনি
    • কোমা

পানিশূন্যতা লক্ষন।

  • ভুল পদ্ধতিতে স্যালাইন খেলে পানিশূন্যতা হতে পারে।
  • স্যালাইন দ্রুত শরীর থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।
  • এর ফলে পানিশূন্যতার লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে, যেমন:
    • তৃষ্ণার্ত হওয়া
    • মুখ শুকিয়ে যাওয়া
    • প্রস্রাব কম হওয়া
    • মাথাব্যথা
    • চোখ বসে যাওয়া
    • বিভ্রান্তিশ 

অন্যান্য কিছু সমস্যা।

  • কিডনিতে সমস্যা
  • হৃৎপিণ্ডের সমস্যা
  • ডায়রিয়া আরও বেড়ে যাওয়া
  • রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি

গুরুত্ব সহকারে মনে রাখবেন।

  • স্যালাইন একটি ওষুধ।
  • যেকোনো ওষুধের মতো স্যালাইনেরও কিছু ক্ষতি আছে।
  • তাই সঠিকভাবে স্যালাইন খাওয়া জরুরি।

একজন মানুষ প্রতিদিন কয়টা স্যালাইন খেতা পারবে?

একজন মানুষ প্রতিদিন কতগুলো স্যালাইন খেতে পারবে তা নির্ভর করে তার বয়স, শারীরিক অবস্থা এবং কতটা পানিশূন্যতায় আক্রান্ত তার উপর।

সাধারণ নিয়ম অনুসারে।

  1. শিশুদের জন

o   - বছর বয়সী শিশুদের জন্য: প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ৫০-১০০ মিলি স্যালাইন খাওয়ানো উচিত।

o   - বছর বয়সী শিশুদের জন্য: প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১০০-১৫০ মিলি স্যালাইন খাওয়ানো উচিত।

o   -১০ বছর বয়সী শিশুদের জন্য: প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১৫০-২০০ মিলি স্যালাইন খাওয়ানো উচিত।

  1. বড়দের জন্য

o   প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১টি স্যালাইন ৫০০ মিলি পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া উচিত।

  1. গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের জন্য।

o   প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ১টি স্যালাইন ৫০০-৭০০ মিলি পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়া উচিত।

তবে মনে রাখতে হবে এগুলি সাধারণ নির্দেশিকা

  • এই নিয়মগুলো কেবলমাত্র একটি সাধারণ নির্দেশিকা।
  • আপনার যদি ডায়রিয়া হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
  • ডাক্তার আপনার বয়স, শারীরিক অবস্থা এবং কতটা পানিশূন্যতায় আক্রান্ত তার উপর ভিত্তি করে আপনাকে কতগুলো স্যালাইন খাওয়া উচিত তা নির্ধারণ করবেন।
  • অতিরিক্ত স্যালাইন খাওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।

কিছু ক্ষেত্রে, আপনার স্যালাইনের চেয়ে বেশি তরল পান করার প্রয়োজন হতে পারে।

  • যদি আপনার প্রচুর বমি বা পাতলা পায়খানা হয়।
  • যদি আপনার জ্বর থাকে।
  • যদি আপনি মূত্রত্যাগ কম করেন।
  • যদি আপনার মুখ শুকিয়ে যায়।
  • যদি আপনি ক্লান্ত বোধ করেন।

তাহলে আপনি একজন রেজিষ্টার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। 
স্যালাইন খাওয়ার পাশাপাশি, আপনার নিম্নলিখিত বিষয়গুলোও মেনে চলা উচিত।
  1. প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন।
  2. হালকা খাবার খান।
  3. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দিন।
আমরা জানি প্রতিটি জিনিসের কৃয়া প্রতিকৃয়া রয়েছে স্যালাইন ও এর বাইরে নয়।স্যালাইন যেমন মানুষের জীবন বাচাতে ব্যবহার ঠিক তেমনি স্যালাইনের অপব্যহারের মানুষের জীবনের বিশাল ক্ষতি হয়।

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪