রমজানের শেষের দশদিনের আমল কি?
রমজানের শেষের দশদিনের আমল কি?
রমজান মাসের শেষের দশদিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই সময়েই রয়েছে শবে কদর, বলা হয় শবে কদর হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এই দশদিনে বান্দার জন্য আল্লাহর রহমত ও মাগফেরাতের দরজা উন্মুক্ত করে দিয়ে থাকেন। আর এই কারণে রমজানের শেষের দশ দিনের বিশেষ কিছু আমল রয়েছে।নিম্নে এ বিষয় গুলি নিয়ে আলচনা করা হল।
- রোজা রাখা
- তারাবিহের নামাজ
- তাহাজ্জুদের নামাজ
- কোরআন তেলাওয়াত
- দান-সদকা
- তওবা ও ইস্তেগফার
- দোয়া-দরুদ
ইতিকাফ কি? ইতিকাফের গুরুত্ব ।
ইতিকাফ একটি আরবি শব্দ। এর অর্থ হলো 'অবস্থান করা'। ইসলামী শরীয়তে ইতিকাফ বলতে বোঝায়, নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময় অবস্থান করা। ইতিকাফের স্থান হয় প্রধানত মসজিদ। পুরুষদের জন্য মসজিদে এবং মহিলাদের জন্য ঘরের ভেতরে নির্দিষ্ট স্থানে ইতিকাফ করা শরীয়তসম্মত।
ইতিকাফ কয় প্রকার?
ইতিকাফ
প্রধানত তিন প্রকার।যথা
- ওয়াজিব ইতিকাফঃ মানতের ইতিকাফ ওয়াজিব। কেউ যদি মানত করে যে, 'আমার কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হলে আমি আল্লাহর রিযার জন্য ইতিকাফ করব', কাজটি সম্পন্ন হলে তার উপর ইতিকাফ ওয়াজিব হয়ে যায়।
- সুন্নত মুয়াক্কাদাঃ রমজান মাসের শেষ দশকের ইতিকাফ সুন্নত মুয়াক্কাদা। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) প্রতি বছর রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ করতেন।
- মুস্তাহাবঃ এছাড়াও, যেকোনো সময়, যেকোনো স্থানে যেকোনো পরিমাণ সময় ইতিকাফ করা মুস্তাহাব।
ইতিকাফের কিছু শর্ত রয়েছে।ইতিকাফের শর্তসমূহ হলো।
- মুসলিম হওয়াঃ কেবলমাত্র মুসলিম ব্যক্তির জন্যই ইতিকাফ করা শরীয়তসম্মত।
- সুস্থ হওয়াঃ পাগল, বোকা, অজ্ঞান ব্যক্তির ইতিকাফ শুদ্ধ হবে না।
- বয়সী হওয়াঃ বালক-বালিকার ইতিকাফ শুদ্ধ হবে না।
- পবিত্র হওয়াঃ হায়েয ও নিফাসের অবস্থায় মহিলাদের ইতিকাফ করা নিষেধ।
- রোজা রাখাঃ রমজান মাসের ইতিকাফে রোজা রাখা ওয়াজিব।
ইতিকাফের ফজিলত কি?
ইতিকাফ
একটি অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। ইতিকাফের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন, গুনাহ মাফ চাওয়া, জান্নাত
লাভ হচ্ছে মূখ্য উদ্দেশ্য।
ইতিকাফের সময় করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয়?
ইতিকাফের
সময় তেলাওয়াত, তাহাজ্জুদ, দোয়া, নফল নামাজ, ইলম
অধ্যয়ন ইত্যাদি কর্ম করা উচিত।
ইতিকাফের সময় মিথ্যা বলা,
গীবত করা, ঝগড়া করা,
অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা বলা ইত্যাদি বর্জন
করা উচিত।
ইবাদতের জন্য রাত্রিজাগরণ করা।
- তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া।
- কোরআন তেলাওয়াত করা।
- দোয়া-দরুদ করা।
শবে কদরের পড়ার
দোয়া।
"আল্লাহুম্মা
ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নী"
ঈদের চাঁদ অনুসন্ধান
করা ও চাঁদ দেখার
পর দোয়ার পড়া।
- রমজান মাস শেষে ঈদের আনন্দ উপভোগ করা।
- সাদকাতুল ফিতর আদায় করা।
- রমজান মাসের শেষে অভাবীদের জন্য নির্ধারিত পরিমাণ অর্থ প্রদান করা।
মনে রাখতে হবে। রমজানের শেষ দশদিনের আমলগুলো করার সময় আন্তরিকতা থাকা জরুরি।রিয়া ও সুম’আ থেকে বেঁচে থাকতে হবে।নিয়মিতভাবে দোয়া-দরুদ করতে হবে।
রমজানের শেষের দশদিন নিয়ে হাদিসে কি আছে?
রমজানের শেষের দশদিন সর্ম্পকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিস।
হযরত
আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)
থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) রমজানের শেষ
দশকে ইতিকাফ করতেন। (সহিহ বুখারি ও
মুসলিম)
হযরত
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "রমজানের
শেষ দশকে লাইলাতুল কদরকে
অনুসন্ধান করো।" (সহিহ বুখারি ও
মুসলিম)
রমজানের শেষের দশদিনে আমরা যেসব কাজ করতে পারি।
- বেশি বেশি ইবাদত করাঃ নামাজ, তেলাওয়াত, জিকির, দোয়া ইত্যাদি।
- ইতিকাফ করাঃ মসজিদে অবস্থান করে ইবাদত করা।
- লাইলাতুল কদরের অনুসন্ধান করাঃ রাত জেগে ইবাদত করা।
- দান-সদকা করাঃ গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা।
- তওবা ও ইস্তেগফার করাঃ গোনাহের জন্য ক্ষমা চাওয়া।
ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url