মুসলমানদের পোশাক কেমন হওয়া উচিত?

 ইসলামে পোশাকের বিধান কি?


পৃথিবীতে ইসলামি এক মাত্র ধর্ম যা আল্লাহ তালা মানুষের জন্য পরিপূর্ন করে পৃথিবীতে পেরণ করেছে।মানুষের জীবন,অর্থনিতি,সমাজনিতি,রাজনিতি,সকল কিছু আল্লাহ-তালা মানুষের ইসলাম ধর্মে শিক্ষা দিয়েছেন।ইসলামে পোশাকের বিধানও রয়েছে যা মুসলিমদের পোশাক পরার সময় অবশ্যয় পালনিয়।

  • সতর ঢাকাঃ পোশাক পরে ও নগ্ন হওয়া উচিত নয়। গাছের পাতা দিয়ে হলেও লজ্জা রক্ষার চেষ্টা করতে হয়।
  • পরিধানের মাপ ও আকৃতিঃ যে কোনো শালিন পোশাক ইসলামে বৈধ।
  • পোশাকের স্বাধীনতাঃ পোশাকের স্বাধীনতা ব্যাপক ও সীমাহীন। ইসলামে অননুমোদিত পোশাক যেহেতু চিহ্নিত তাই পোশাকের স্বাধীনতার সীমানা ব্যাপক ও সীমাহীন

আল্লাহর রাসুল (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ সুন্দর। আর তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন” ইসলামে পোশাক পরার সময়, মানুষের সৌন্দর্য, রুচিবোধ ও ব্যক্তিত্ব যার মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি প্রকাশ পায়, তা হলো পোশাক। আল্লাহর নির্দেশ মেনে জান্নাতে সর্বপ্রথম পোশাক পরেছিলেন হজরত আদম ও হাওয়া (আঃ)।


ইসলাম শান্তির ধর্ম তা নিরদিধায় মেনে নেয়ার নামই ইসলাম।ইসলামে নারি পুরুষের পোশাকের ব্যপারে বিধান রয়েছে।ইসলামে পোশাকের বিধান পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্যই আলাদাভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।

পুরুষদের জন্য পোশাক।

  • সতর ঢাকাঃ পুরুষদের জন্য নাভির নিচ থেকে হাঁটু পর্যন্ত অংশ ঢাকা বাধ্যতামূলক।
  • পাতলা পোশাকঃ এমন পোশাক পরিধান করা যাবে না যার ভেতর দিয়ে শরীরের গঠন স্পষ্ট হয়ে যায় বা দেখা যায়।
  • স্বর্ণ ও রেশমঃ পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ও রেশমের পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
  • লম্বা পোশাকঃ পায়ের গোড়ালি অতিক্রম করবে এমন পোশাক পুরুষের পরিধান করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
  • নারীদের অনুকরণঃ নারীদের পোশাকের অনুকরণ করে পুরুষের পোশাক পরিধান করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নারীদের জন্য পোশাক।

  • সতর ঢাকাঃ নারীদের জন্য পুরো শরীর ঢাকা বাধ্যতামূলক।
  • হিজাবঃ নারীদের জন্য হিজাব পরিধান করা বাধ্যতামূলক, যা মাথা থেকে শুরু করে পুরো শরীর ঢেকে দেয়।
  • পাতলা পোশাকঃ এমন পোশাক পরিধান করা যাবে না যার ভেতর দিয়ে শরীরের গঠন স্পষ্ট ভাবে দেখা যাবে।
  • আলংকারিক পোশাকঃমেয়েদের এমন পোশাক পরিধান করা যাবে না যা দেখে পুরুষদের দৃষ্টি আকর্ষিত হবে।
  • পুরুষদের অনুকরণিয়ঃ পুরুষদের পোশাকের অনুকরণি পোশাক মেয়েদের পরিধান করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে

নারি পুরুষ উভয়ের জন্য পোশাক।

  • পরিষ্কারঃ পোশাক পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ইসলামে গুরুত্বপূর্ণ।
  • সাধারণ পোশাকঃ অতিরিক্ত বিলাসবহুল পোশাক পরিধান করা উচিত নয়।
  • নিয়তঃ পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের নিয়ত রাখা উচিত

রাসুল (সাঃ) এর পোশাক কেমন?

রাসুল (সাঃ) এর পোশাক ছিল সহজ, মার্জিত এবং পরিচ্ছন্ন। তিনি সাধারণত যে পোশাকগুলো পরিধান করতেন তার মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পোশাক হলো:

. কামিসঃ

  • এটি হলো লম্বা, ঢিলেঢালা জামা যা টাখনু পর্যন্ত পৌঁছায়।
  • রাসুল (সাঃ) সাদা, কালো, এবং সবুজ রঙের কামিস পরিধান করতেন।

. রিদাঃ

  • এটি হলো একটি চাদর যা কাঁধের উপর দিয়ে জড়িয়ে দেওয়া হয়।
  • রাসুল (সাঃ) সাধারণত সাদা রঙের রিদা ব্যবহার করতেন।

. ইযারঃ

  • এটি হলো কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত লম্বা পোশাক।
  • রাসুল (সাঃ) সাদা রঙের ইযার পরিধান করতেন।

. তুবানঃ

  • এটি হলো টুপি।
  • রাসুল (সাঃ) সাধারণত কালো রঙের তুবান ব্যবহার করতেন।

. খুফফঃ

  • এটি হলো জুতা।
  • রাসুল (সাঃ) চামড়ার তৈরি খুফফ পরিধান করতেন।

পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে রাসুল (সাঃ) এর কিছু রীতিনীতি।

  • তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করতে পছন্দ করতেন।
  • তিনি সুগন্ধি ব্যবহার করতেন।
  • তিনি পোশাক পরিধানের সময় দোয়া পড়তেন।
  • তিনি পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতেন পছন্দ করতেন।
  • রাসুল (সাঃ) গরমের সময় হালকা এবং শীতের সময় মোটা পোশাক পরিধান করতেন।
  • তিনি যুদ্ধের সময় যুদ্ধের পোশাক পরিধান করতেন।
  • তিনি ঈদের দিন সর্বোত্তম পোশাক পরিধান করার চেষ্টা করতেন।
উল্লেখ্য পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে। তাই, পোশাক পরিধানের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম পন্থা হলো একজন আলেমের সাথে পরামর্শ করা।

পাঞ্জাবি কি সুন্নতি পোশাক?

পাঞ্জাবি সুন্নতি পোশাক কিনা, এই প্রশ্নের উত্তর সহজ নয়। কারণ, 'সুন্নতি পোশাক' বলতে স্পষ্ট কোন নির্দিষ্ট পোশাক বোঝায় না।

  • হাদিসঃ হাদিসে নবী (সাঃ) এর পোশাক সম্পর্কে কিছু বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে, 'পাঞ্জাবি' শব্দটি হাদিসে উল্লেখ নেই।
  • ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটঃ নবী (সাঃ) এর আমলে আরবের পোশাকের সাথে আধুনিক পাঞ্জাবির বেশ কিছু মিল রয়েছে।
  • সাংস্কৃতিক প্রভাবঃ পাঞ্জাবি দক্ষিণ এশিয়ার, বিশেষ করে বাংলার, ঐতিহ্যবাহী পোশাক।

বিভিন্ন মতামত।

  • কিছু আলেম মনে করেনঃপাঞ্জাবি সুন্নতি পোশাক কারণ এটি নবী (সাঃ) এর পোশাকের সাথে মিল রাখে।
  • অন্যরা মনে করেনঃ পোশাকের ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই, বরং শালীনতা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।
  • অন্যরা মনে করেনঃ পাঞ্জাবি 'সুন্নতি পোশাক' হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয় কারণ এটি ঐতিহাসিকভাবে আরবের পোশাক নয়।

পরিশেষে পাঞ্জাবি 'সুন্নতি পোশাক' কিনা, এই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর নেই। মতামত ভিন্ন ভিন্ন। পোশাক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যক্তির ঈমান, সংস্কৃতি এবং ব্যক্তিগত পছন্দ বিবেচনা করা উচিত।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ১

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ২

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৩

এইটা একটি বিজ্ঞাপন এরিয়া। সিরিয়ালঃ ৪