রমজানের সেহেরি ও ইফতারির গুরুত্ব।
২০২৪ সালের রমজান।
ইসলামের মূল ভিত্তি পাচটি কালেমা,নামাজ, রোজা,হজ এবং যাকাত।রোজা বা সিয়াম নামেও পরিচিত,ইসলাম ধর্মের পাঁচটি মূল ভিত্তির তৃতীয় টি।ইসলামে রোজা পালন করার ব্যপারে জোড় তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
রোজা পালন করার নিয়ম।
সুবহে
সাদেক (ভোরের আলো ফোটার পর)
থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সকল প্রকার পানাহার
(খাওয়া-দাওয়া) থেকে বিরত থাকা।
- ধূমপান থেকে বিরত থাকা।
- যৌনতা থেকে বিরত থাকা।
- সকল প্রকার মিথ্যা বলা, গীবত করা, পরনিন্দা করা, রাগান্বিত হওয়া, এবং অন্যান্য অসৎ কর্ম থেকে বিরত থাকা।
রোজা পালনের অনেক ফজিলত রয়েছে।
- আল্লাহর রহমত ও ক্ষমার লাভ করা।
- জান্নাতে প্রবেশের পথ সহজ করা।
- পাপ-পঙ্কিলতা থেকে মুক্তি নিজেকে বিরত রাখা।
- শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী রোজা।
- মানুষের মধ্যে দানশীলতা ও সহানুভূতি বৃদ্ধি করে রোজা।
রোজা পালনের কিছু শর্ত রয়েছে।
- প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ, এবং বুদ্ধিমান হতে হবে সকল নর –নারী কে।
- মহিলাদের মাসিক ঋতু বা প্রসবের রক্তপাত বন্ধ থাকতে হবে।
- দীর্ঘ ভ্রমণকারী ব্যক্তি রোজা না রাখতে পারেন তবে কিছু মাসলা রয়েছে।
রোজা ভাঙ্গার কিছু কারণ ও রয়েছে।
- কোন মানুষ জেনে-বুঝে রোজা ভাঙ্গলে কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) দিতে হবে।
- অজান্তে বা ভুলে রোজা ভাঙ্গলে কাফফারা দিতে হবে না।
- বয়স্ক, অসুস্থ, এবং দীর্ঘ ভ্রমণকারী ব্যক্তিরা রোজা না রাখলে তাদের উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়।
রমজান শব্দের অর্থ কি?
রমজানের সেহরি খাওয়া কি?
রমজান মাসে সেহরি খেয়ে রোজা রাখার জন্য সুন্নত। সেহরি রোজাদারদের দিনভর শক্তি ও তৃপ্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।রোজা রাখার পূর্ব শর্ত হল সেহেরি খাওয়া ।তাই বলতে পারি রমজান মাসে রোজা রাখার ক্ষেত্রে সেহেরির গুরুত্ব অনেক।
সেহরি খাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে।
- সুন্নতঃ রাসুল (সাঃ) সেহরি খাওয়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন এবং এটিকে একটি সুন্নত হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
- শক্তি যোগায়ঃসেহরি খাওয়া রোজাদারদের দিনভর শক্তি ও তৃপ্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
- নির্জলাতাজনিত ঝুঁকি কমায়ঃ সেহরি খাওয়া পানিশূন্যতা রোধ করে এবং নির্জলাতাজনিত ঝুঁকি কমায়।
- কর্মে মনোযোগঃ সেহরি খাওয়া মনোযোগ ধরে রাখতে এবং ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করে।
- রোজা রাখতে সহয়তাঃ সেহরি খাওয়া রোজা পালন সহজ করে এবং দিনভর ধৈর্য ধরে রাখতে সাহায্য করে।
সেহরির সময় কখোন?
- ফজরের আযানের পূর্ব পর্যন্ত সেহরি খাওয়ার সময় বলে অবহিত।
- সন্দেহ হলে সেহরি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া উচিত।
সেহরিতে কী খাবার খাবেন?
- সেহরিতে এমন খাবার খাওয়া উচিত যা দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখে ও হজম ভাল হয়।
- খেজুর, ওটমিল, ডিম, রুটি, দুধ, ফল, শাকসবজি ইত্যাদি সেহরির জন্য উত্তম খাবার।
- অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত, ভাজা-পোড়া এবং মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলা উচিত আমাদের।
- আমাদের সেহেরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিত।
সেহরি খাওয়া রমজান মাসে রোজা রাখার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি রোজাদারদের দিনভর শক্তি ও তৃপ্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে এবং পানিশূন্যতার ঝুঁকি কমায় শরীরে।
রমজানের ইফতারি কি?
রমজানে ইফতারি করা অপরিহার্য ।কারন ইফতারি ছাড়া রোজার পুর্নতা পাইনা। ইফতা শব্দের অর্থ উপবাস ভঙ্গ করা। আরবি ভাষা থেকে আফতার শব্দটি এসেছে।এর অর্থ বিরত থাকা থেকে বিরতি নেওয়া।
ইসলামী পরিভাষায় ইফতার।
- সূর্যাস্তের পর খেজুর, পানি বা অন্য কোন খাদ্য দ্রব্য দিয়ে রোজা খোলাকে ইফতা বলে।
- ইফতারের মাধ্যমে রমজান মাসের রোজা পালন করা হয়।
- ইফতার শুধু খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপার নয়, এটি আধ্যাত্মিক ও সামাজিক একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান।
রমজানে ইফতারের গুরুত্ব।
- ইফতারের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে চলা উপবাসের বিরতি নেওয়া হয়।
- ইফতার পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করে।
- ইফতারের সময় দানশীলতা ও দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা হয়।
ইফতারের করার নিয়ম কি?
- ইফতার সূর্যাস্তের পর করা উচিত।
- খেজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নত।
- ইফতারের সময় দোয়া করা উচিত।
- ইফতারের সময় পরিমিত খাওয়া উচিত।
ইফতারের দোয়া কি?
- “ইয়া ওয়াসিয়াল মাগফিরাতি, ইগফিরলী।“
অর্থ: "হে মহান ক্ষমা দানকারী! আমাকে ক্ষমা করুন।"
- "আল্লাহুম্মা লাকাসুম্তু, ওয়া 'আলাইক্যাতাওয়াক্কুলতু, ওয়া বিরিযকিকা আফতারতু, ফাগফিরলী মা কাদ্দামতু ওয়া মা আখখারতু।"
অর্থ: "হে
আল্লাহ! আমি আপনার জন্য
রোজা রেখেছি এবং আপনার রিযিক
দিয়ে ইফতার করছি। আমার অতীত ও
ভবিষ্যতের গুনাহ মাফ করে দিন।"
ইফতারের পরের দোয়া।
- "আলহামদুলিল্লাহি হাল্লাযী আত'আমানা ওয়া সাকানা ওয়া জা'আলানা মিনাল মুসলিমীন।"
অর্থ: "সেই
আল্লাহর প্রশংসা যিনি আমাদের খাওয়ালেন,
পান করালেন এবং আমাদেরকে মুসলিমদের
অন্তর্ভুক্ত করলেন।"
ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url