কিডনী রোগ কি/কেন হয়?
কিডনী রোগ কি?
কিডনী রোগ হলো এমন একটি রোগ যখন কিডনীর কাজ করা বন্ধ হয় অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কিডনী রোগের কারণে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বেড়ে যায় এবং এর কারণে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে। কিডনী রোগের বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে। যেমন- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিডনীতে পাথর, কিডনীতে ইনফেকশন, কিডনী ফেইলার ইত্যাদি।
কিডনী রোগের চিকিৎসা হলো রোগের কারণ ও ধরনের উপর নির্ভরশীল। কিছু ক্ষেত্রে ঔষধ আবার কিছু ক্ষেত্রে ডায়ালাইসিস এবং কিছু ক্ষেত্রে কিডনী প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হয়।
কিডনী রোগ কেন হয়?
কিডনী
রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে নিম্নে
কিছু কারণ হলোঃ
- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ যা কিডনীর ক্ষতি বাড়াতে পারে।
- কিডনীতে পাথর, ইনফেকশন,প্রস্রাবের বাধা, কিডনীর রক্তনলীর অবরোধ যেমন অবস্থা যা কিডনীর কার্যকারিতা বাধা দিতে পারে।
- কিডনী রোগের লক্ষণ হতে পারে প্রস্রাবের পরিবর্তন, প্রস্রাবের সময় ব্যথা, প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া।
- কিডনী রোগের কারণে দেহে ফোলা ভাব, মনোযোগ দিতে অসুবিধা, শীত বোধ, বমি বা বমি ভাব, ছোটো ছোটো শ্বাস ইত্যাদি।
আরো পড়ূনঃমাথাব্যথার কারণ কি ?
কিডনী রোগ থেকে প্রতিরোধের জন্য কিছু অভ্যাস অনুসরণ করতে হবে। কিছু পরামর্শ হলো নিম্নরূপঃ
- পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করা।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা।
- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।
- ধূমপান, মাদকদ্রব্য ও অতিরিক্ত ক্যাফিন এড়িয়ে চলতে হবে।
- খাবারে সঠিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে। লবণ, প্রোটিন, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের পরিমাণ সীমাবদ্ধ রাখতে হবে খাবারে।
- কিডনীর ইনফেকশন এড়াতে নিয়মিত প্রস্রাব পরীক্ষা করান।
·
কিডনী
রোগের ঝুঁকি বা লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত
চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে
হবে।
কিডনী রোগর প্রাথমিক লক্ষন কি?
কিডনী রোগর কিছু প্রাথমিক লক্ষন রয়েছে তা হল।- প্রস্রাবের পরিমাণ বা রং পরিবর্তন হতে পারে।
- প্রস্রাবের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া, বা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া।
- চোখের পাতা, পা, হাত বা মুখে ফোলা ভাব হওয়া হতে পারে।
- শরীর ক্লান্ত, শীতল অনুভূতি, বা দুর্বল বোধ করা।
কিডনী রোগর জন্য কোন ডাক্তার দেখাব?
কিডনী কোন সমস্যার জন্য একজন নেফ্রোলজিস্ট বা কিডনী বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাতে হবে। নেফ্রোলজিস্টরা কিডনীর অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত।নেফ্রোলজিস্টরা কিডনীর রোগ, সংক্রমণ, পাথর, ডায়ালাইসিস, কিডনী প্রতিস্থাপন ইত্যাদি নিয়ে কাজ করেন।ঢাকার কিছু কিডনী রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নাম ও ঠিকানা হলো নিম্নরূপঃ
- অধ্যাপক ডাঃ রানা মোকাররম হোসেন, কিডনী রোগ ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
- ডাঃ হাসান মাহমুদ, কিডনী, মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, বিসিএস (স্বাস্থ্য), সিসিডি (বারডেম), এফআরএসএইচ (লন্ডন)।
- ডাঃ মোঃ দেলোয়ার হাসান (টিটো), কিডনী, মেডিসিন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ, জাতীয় কিডনী রোগ ও ইউরোলজি ইনস্টিটিউট (এনআইসিডিও)ঢাকা।
আরো পড়ূনঃএ্যাজিথ্রোমাইসিনের ব্যবহারের নিয়ম।
কিডনী রোগ কি ভাল হয়?
কিডনী রোগ হলো কিডনীর কার্যক্ষমতা কমে যায়। কিডনী রোগ বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইনফেকশন, কিডনী পাথরি, কিডনীর ক্যান্সার ইত্যাদি। কিডনী রোগ ভাল হতে পারে যদি সময়মত চিকিৎসা করা হয় এবং কিডনীর স্বাস্থ্য বাঁচানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। কিছু পদক্ষেপ হলোঃ
- নিয়মিত পানি পান করা। পানি পান করলে কিডনী রক্ত পরিষ্কার করে এবং বর্জ্য পদার্থ বাহির করে।
- স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করা। কিডনী রোগীর জন্য কিছু খাদ্য এড়িয়ে চলতে হবে, যেমন লবণ, পটাশিয়াম, ফসফরাস, প্রোটিন ও সোডিয়াম যুক্ত খাবারে।
- ব্যায়াম করলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।তাই নিয়মিত নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- ধূমপান, মাদকদ্রব্য ও অতিরিক্ত মাদ্যপান এড়িয়ে চলুন। এই অভ্যাসগুলো কিডনীর ক্ষতি করে।
- কিডনীর পরীক্ষা করালে কিডনীর অবস্থা জানা যায় তাই নিয়মিত কিডনীর পরীক্ষা করানো। এবং কিডনীর কোন সমস্যা থাকলে তা সময়মত চিকিৎসা ব্যবস্থা করা।
উপ সংহার ঃ কিডনী রোগ খুবিই গুরুতর ও জটিল রোগ। কিডনী রোগীকে যদিও বাঁচানো যায়, তবে রোগীর জীবনের মান উন্নত হয়। তাই প্রতিটি মানুষের কিডনী রোগের লক্ষণ, প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা করা খুবই জরুরি।
ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url