আমাদের জ্বর কেন হয়?
আমাদের জ্বর কেন হয়?
হঠাৎ
করে জ্বর হওয়ার অভিজ্ঞতা
কম-বেশি আমাদের সবারই আছে।আবহাওয়া পরিবর্তনের রেশ চলছে এখন।সর্দি-কাশি ও জ্বর আছে।আমাদের জ্বর কেন হয়? ওষুধে কীভাবেই বা জ্বর ভালো হয়?আমাদের আশপাশের অনেকেই হয়ত এখন জ্বরে আক্রান্ত
হয়েছেন আছেন।আবার অনেকেই
সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় আছেন।জ্বর তাপমার্তা বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।তবে জ্বরের
প্রাথম দিকে ঘরোয়া কিছু টিপস মেনে চললে ওষুধ
ছাড়াই আরোগ্য লাভ করা সম্ভব।জ্বরের কারণে
হাসপাতালে ভর্তির অভিজ্ঞতাও রয়েছে আমাদের অনেকের।
আরো পড়ূনঃমাথাব্যথার কারণ কি?
চিকিৎসকদের
মতে,জ্বরে কয়েক প্রকার।কিছু জ্বর আছে আপনা আপনি সেরে
যায়,আবার কিছু কিছু জ্বরের
ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
জ্বর সর্ম্পকে কিছু পরামর্শ
আপনার যে কারণেই জ্বর হোক,চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে নিরাপদ রাখতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তৌফিক আহমেদ।
জ্বরের প্রকার ভেদ।
ডেঙ্গু জ্বর
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী প্রতি বছর কিছু সংক্ষক মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।আর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে অনেকেই।
এ
জন্য ডেঙ্গু জ্বর মৌসুমে
কারো ,সর্দি-কাশি,গলাব্যথা,শরীরব্যথা
যদি থাকে তাহলে সাথে সাথে চিকিৎসকের
পরামর্শ নেয়ার উপদেশ দিচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।যারা আগে থেকেই স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন তারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তা জটিল
হওয়ার শঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
আরো পড়ূনঃ সর্দিজ্বর ও ঠান্ডা লাগার কারণ কি?
ডেঙ্গু
জ্বর আক্রন্ত রোগীদের শরীরের যে কোন জায়গা
থেকে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ মানেই তা হেমারেজিক ডেঙ্গুতে
রূপ নিয়েছে।রোগী মারা যেতে পারে
হেমারেজিক ডেঙ্গুতে
যদি রোগীর ব্রেইন,হার্ট এরকম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গে
যদি হেমারেজ হয়।
হলুদ জ্বর কি?
এই জ্বর মশার কামড়ায় ছড়ায় সাধারণত।এই জ্বর এডিস এবং হেমাগোগাস মশার কামড়ে ছড়ায়।এ জ্বরের লক্ষণ গুল হল মাংসপেশী ব্যথা, মাথাব্যথা, ক্ষুধামন্দা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি।এই জ্বর সাধারণত ৩-৫ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়।
এই
জ্বরে শরীরের তাপমাত্রা প্রচণ্ড বেড়ে যায় এবং
জ্বর থেকে থেকে আসে।এই জ্বরে বিশেষ করে মানুষের লিভার
আক্রান্ত হয়।পরে মানুষ জন্ডিসে আক্রান্ত হয়।জন্ডিসে আক্রান্ত হলে ত্বক এবং চোখে
হলুদ হয়ে যায়।
ম্যালেরিয়া জ্বর
ম্যালেরিয়া জ্বর হলে জ্বরের সাথে সাথে ঠান্ডা, মাথাব্যথা, খিঁচুনি ও নিঃশ্বাস নিতে সমস্যা হয়। তাহলে দেরি না করে সাথে সাথে তাকে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।ম্যালেরিয়া জ্বরের এ লক্ষণে প্রাণঘাতি হতে পারে।
ম্যালেরিয়া
জ্বর ছড়ায় অ্যানোফিলিস
নামে এক ধরণের স্ত্রী
মশার মাধ্যমে।এছাড়া ম্যালেরিয়া আক্রান্ত
ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ
করলে বা ম্যালেরিয়া আক্রান্ত
ব্যক্তির ব্যবহৃত সুঁচ
ব্যবহারের মাধ্যমেও এটি ছড়াতে পারে।তবে
এটি মারাত্মক আকার ধারণ করলে
আক্রান্ত ব্যক্তি যে কোন দূঘটনা ঘটতে পারে।ম্যালেরিয়া
একটি প্রাণঘাতি রোগ এবং ম্যালেরিয়া গ্রীষ্মমন্ডলীয়
দেশগুলোতে বেশি সংক্রমিত হয়।
টাইফয়েড জ্বর
টাইফয়েড জ্বরের অন্যতম উপসর্গ হচ্ছে উচ্চমাত্রায় জ্বর।এছাড়া টাইফয়েড জ্বরে প্রচণ্ড ক্লান্তি, মাথাব্যথা, বমি, পেট ব্যথা থাকে। টাইফয়েড জ্বরের সাথে এ ধরণের উপসর্গ অনেক সময় প্রাণঘাতি হতে পারে। এ ধরণের উপসর্গ দেখলে অবশ্যয় একজন রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
টাইফয়েড
জ্বর মারাত্মক আকার ধারণ করলে
মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, প্রতিবছর টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়
লক্ষাধিকের উপরে।আর আক্রান্ত
হয় প্রায় লক্ষাধিক।
জ্বর থেকে প্রতিরোধ
এ জ্বর গুলো যেহেতু মশাবাহিত রোগ,তাই প্রথমে মশা প্রতিরোধ করতে হবে।মশার বংশ বিস্তার হয় লার্ভা মাধ্যমে।যা করতে হবে পাত্রে নির্মীয়মাণ বাড়ির চৌবাচ্চা, ফেলে দেওয়া টায়ার, নারিকেল খোলা, ইত্যাদির মধ্যে পানি জমতে দেওয়া যাবে না।ঘরের মধ্যে মশা মারার জন্য সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে।ভ্যাক্সিন আবিষ্কৃত হলেও প্রয়োগ শুরু হয়নি।
জ্বরের তাপমাত্র কত হলে ওষুধ খাওয়া উচিত?
মানুষের শরীরে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৭-৯৮ ফারেনহাইট।তবে শরীরে ১০০-১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রা হলে ঔষুধ হিসেবে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে। তবে শরীরে তাপমাত্রা ১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হলে সাপোজিটরি দিতে হবে।জ্বর হলে তিন দিন পর্যন্ত প্যারাসিটামল গ্রহণ করা যাবে।তবে জ্বর বেড়ে গেলে একজন রেজিস্টার চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
উপ সংহার
আবহাওয়া
পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘরে ঘরে জ্বর হানা দেয় এটা নতুন নয়।
ডিজিটাল সাকসেস আইটির নিতীমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url